দখিনের খবর ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এই ‘বিধিনিষেধ’ বহাল থাকবে। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ তা কার্যকর থাকবে। গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে চলমান বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন হতে পারে। তিনি আরও জানান, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে চলমান বিধি-নিষেধ আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সময় দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত চালু থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বাড়ার কারণে ২৯ এপ্রিল থেকে আগামী ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত নতুন করে বিধি-নিষেধ দেওয়া হবে। এদিকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে আগের নির্দেশনা কিছুটা সংশোধন করে দোকান ও শপিংমল রাত ৮টা পর্যন্ত খোলার রাখার সিদ্ধান্ত আসছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের এই অবস্থাটা কন্টিনিউ করতে হবে। সরকার সেই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, আগামীকাল (মঙ্গলবার) সেই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যে অবস্থাটা আছে সেটাই আরও এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তবে দোকানপাট, শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কেট খোলা রাখতে হচ্ছে, তাদের এখানে বড় ধরনের বিনিয়োগের বিষয় রয়েছে। এখন মার্কেট ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে, সেটা এক ঘণ্টা কমে রাত ৮টা পর্যন্ত হবে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট ও দোকান পরিচালিত হবে। মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে চলমান লকডাউন শিথিল করে গত রোববার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরে গত রোববার পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, দোকানপাট ও শপিংমল রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে অফিস-আদালত, গণপরিবহন এবং দোকানপাট ও শপিংমলমল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক নির্দেশনায় ২৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট এবং শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা পর্যন্ত লকডাউন ছিল। তবে গণপরিবহন, মার্কেট খোলা রেখে এই লকডাউন ছিল অনেকটাই অকার্যকর। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন, দোকানপাট এবং মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে লকডাউন দেওয়া হয়। গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতষ্ঠান বন্ধ এবং ২৬ মার্চ থেকে সব অফিস-আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই সময়ে গণপরিবহনও বন্ধ রাখা হয়েছিল। ৬৬ দিন পর সাধারণ ছুটি শেষ হলেও একবছর গড়িয়ে এখনও বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালু রেখেছে।
Leave a Reply